ঈদে মিলাদুন্নবী কি? ঈদে মিলাদুন্নবী কি পালন করা জায়েজ? ইসলাম কি বলে?
📿ঈদ মানে আনন্দ। মিলাদুন্নবী হল রাসুলের আগমনের দিন। অর্থ্যাৎ রাসুলের জন্ম উপলক্ষে যে আনন্দ করা হয় তাকে ঈদে মিলাদুন্নবী বলা হয়।
আমাদের উপমহাদেশে এই ঈদে মিলাদুন্নবী খুব আয়োজন করে পালন করা হয়। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ থাকে। বিভিন্ন জায়গায় মিলাদ খাবার বিতরন করা হয়। কিন্তু কথা হল এই ঈদে মিলাদুন্নবী কি আদৌ শরিয়তসম্মত?
ইসলাম হল পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান। কি কি করা যাবে, কি কি করা যাবে না তা রাসুল (সা.) পরিস্কারভাবে বলে গিয়েছেন। রাসুল (সা.) নিজের জীবদ্দশায় কখনো আয়োজন করে নিজের জন্মদিন পালন করেনি অথবা বলেনি আমার জন্মদিনে তোমার এই এই আমল কর।
সাহাবা থেকে তাবেঈ-তাবেঈন থেকে এমন কোন সুন্নাহ অথবা আমল পাওয়া যায়নি। এই মিলাদুন্নবী শুরু হয় রাসুলের ওফাতের ৫৫০/৬০০ বছর পর। প্রথম দিকে বিষয় ছিল রাসুলের উপর দুরদ পড়া রাসুলের সিরাত নিয়ে আলোচনা করা। কিন্তু বর্তমানে মিলাদুন্নবী হল,
নবীর রুহের আগমন কল্পনা করে দাঁড়িয়ে “ইয়া নবী সালামু আলাইয়া” বলা।
বলা বাহুল্য ইসমামে নতুন কিছু মানেই বিদয়াত। ছোট বিদয়াত বড় হতে হতে এখন বড় আকার ধারণ করেছে যা কুফুরির পর্যায়ে চলে গিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ কথা হল যারা নবীর ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্য এই ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে উনারা কিছু কুরআনের আয়াত দিয়ে দলিল পেশ করে থাকেন যেমন সুরা ইউসুফ থেকে-
📍Yunus 10:57
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَآءٌ لِّمَا فِى ٱلصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
হে মানুষ! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এসেছে এক উপদেশ, অন্তরের রোগ-ব্যাধির উপশম এবং মুমিনদের পক্ষে হিদায়াত ও রহমত।
Yunus 10:58
قُلْ بِفَضْلِ ٱللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِۦ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا۟ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
(হে নবী!) বল, এসব আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমতেই হয়েছে। সুতরাং এতে তাদের আনন্দিত হওয়া উচিত। তারা যা-কিছু পুঞ্জীভূত করে, তা অপেক্ষা এটা শ্রেয়!
📍 এবং “স্মরণ কর আল্লাহর নিয়ামতকে যা তোমাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে” -(সূরা বাক্বারা-২৩১)
📍আরেক আয়াতে বলা হয়…
“হে হাবীব, নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি” -(সূরা আম্বিয়া-১০৯)
“এই তিনটি আয়াত একত্রিত করে বিবেচনা করলে দেখা যাবে আল্লাহর নবী আমাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত। তাই তিনি যেদিন দুনিয়াতে তাশরীফ এনেছেন সেদিনকে স্মরণ করে আমাদের খুশি পালন করা উচিত। আর এই কাজটিকেই বলা হয় ঈদ ই মিলাদুন্নবী। অর্থাৎ নবীজীর আগমনে খুশী উৎযাপন করা।” এভাবেই উনারা দলিল পেশ করে থাকেন। কিন্তু এই আয়াতগুলোর তাফসীর অন্য কিছু বর্ননা করে। তাছাড়া আয়াত থেকে সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে না যে রাসুলের আগমনের দিন আনন্দ করতে হবে
কথা হল যদি সত্যিই মিলাদুন্নবী ঈদ হত তাহলে রাসুল ঈদুই ফিতর ও আযহার সাথে এই ঈদে মিলাদুন্নবীর কথা বলতেন নিজে পালন করতেন। অবশ্যই রাসুল (সা.) এর আগমন ছিল আনন্দের। কিন্তু এই রাসুলের জন্মদিনকে ঈদ বানিয়ে ফেলে বিদয়াত। আর বিদয়াত কখনো গ্রহনযোগ্য নয়।