সুরা ফাতেহার অর্থ –
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
অনুবাদ : শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অনুবাদ : যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
অনুবাদ : যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
অনুবাদ : বিচার দিনের একমাত্র অধিপতি।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
অনুবাদ : আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
অনুবাদ : আমাদের সরল পথ দেখাও।
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
সুরা ফাতেহা কখন কিভাবে অবতীর্ণ হয়?
একবার রাসুল (সা.) নির্জন জায়গা দিয়ে যাচ্ছিল। তিনি হঠাৎ শুনতে পেলেন – হে মুহাম্মদ তিনি উপরে তাকিয়ে দেখলেন আকাশ ও জমিনের মাঝখানে একটি ঝুলানো চেয়ার, তার উপর উপবিষ্ট একজন জ্যোতির্ময় পুরুষ।
তা দেখে মানুষ হিসেবে তার মধ্যে ভয় হয় তখন তিনি ঘরে ফিরে আসেন। এবং তিনি ঘরে এসে হযরত খাদিজা (রা.)কে সকল ঘটনা খুলে বলেন।
তখন খাদিজা (রা.) পরামর্শ দিলেন যে আপনি আবু বকর (রা.) কে সাথে নিয়ে বিচক্ষন, শাস্ত্রবিদ ওরাকা ইবনে নাওফালের কাছে এই ব্যাপারে অবগত করুন। আমার বিশ্বাস তিনি এই ঘটনার রহস্য বলে দিতে পারবেন।
পরামর্শ অনুযায়ী রাসুল (সা.) ওরাকা ইবনে নাওফালের নিকট গিয়ে সব ঘটনা খুলে বলেন। তা শুনে ওয়ারাকা বলে উঠলেন কুদ্দুসুল কুদ্দুসন (শুভ শুভ) তিনি যে নামসুল আখবার (স্বর্গীয় বাণীবাহক) জিব্রাইল।
অতঃপর তিনি বললেন, এরপর যদি এমন ঘটনা আবার ঘটে তাহলে আপনি ভীত না হয়ে জ্যোতির্ময় পুরুষ যা বলে,তা স্হিরভাবে শুনুন।
তারপর একদিন যখন রাসুল পুনরায় নির্জন জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময় যখন শুনতে পেলেন ” ইয়া মুহাম্মদ” তখন রাসুল ” লাব্বাইক ” (উপস্থিত) বলে উত্তর দিলেন। তখন জিবরাইল (আ.) রাসুলের কাছে প্রকাশ হয়ে বললেন – হে মুহাম্মদ আপনি মানব জাতীর জন্য আল্লাহর মনোনীত নবী এবং আমি তার প্রেরিত জিবরাইল ফেরেশতা। তখন তিনি বললেন, বলুন – الحمد الله رب العامين- সুরা ফাতেহার শেষ পর্যন্ত।
সুরা ফাতেহা পড়ার উপকারিতা-
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, কয়েকজন সাহাবি আরবের এক গোত্রে এলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোনো মেহমানদারি করল না। হঠাৎ ওই গোত্রের এক নেতাকে সাপে কাটে। তখন তারা এসে বলল, আপনাদের কাছে কি কোনো ঔষধ আছে?
তারা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তোমাদের আমাদের মেহমানদারি করাতে হবে। আমরা খুব ক্ষুদার্ত। তারা মেহমানদারি করতে রাজি হয়ে যায়। এ ছাড়া আমরা তাদের কাছে একপাল বকরি চাইল।
তখন একজন সাহাবি উম্মুল কোরআন অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়ে মুখে থুথু জমা করে সে ব্যক্তির ক্ষতে মেখে দিলেন। ফলে বিষ নেমে গেল এবং সে নেতা সুস্থতা লাভ করব
সাহাবিরা খাওয়া-দাওয়া করে নবী করিম (সা.)-এর কাছে বকরিসহ ফিরে এলেন। তারা রাসূল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন তাদের এ ধরনের কাজ ঠিক হল কি না। নবী (সা.) শুনে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, ঠিক আছে বকরিগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দিও। (বুখারি)