আজকে আমরা শিখব এমন কিছু আদব যা আমাদের জীবনে অত্যান্ত জরুরি আদব।
যেসব আদব না মানার কারনে গুনাহও হতে পারে।
যেমন মা -বাবার সাথে বেয়াদবি, উস্তাজার/শিক্ষকের মনে কষ্ট দেয়া অথবা মোবাইল ফোন থেকে কি কি বিপদ হতে পারে।
এইসব আদব জানা ও মানা ও বাচ্চাদের ছোট থেকেই এই আদবের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করা আমাদের দায়িত্ব।
আদবসমুহ-
মাতা- পিতার সাথে আদব:-
মা – বাবার সাথে উত্তম ব্যবহার করা।
মা – বাবা ডাকলে সাথে সাথে সাড়া দেয়া এবং হাজির হওয়া।
মা বাবার হুকুম মান্য করা তাদের অনুমতি ছাড়া কোন কাজ না করা।
মা বাবার সাথে ভক্তি, সম্প্রীতি ও বিনয়ের সাথে কথা বলা।
মা বাবাকে কষ্ট ও গালি না দেয়া।
মা বাবার খিদমাত করা,কথায়,কাজে, আচার- আচরনে মা বাবার প্রতি সম্মান রাখা।
মা বাবার আত্নীয় স্বজনের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখা ও ভাল ব্যবহার করা,মা বাবা ভরন পোষন দেয়া( ছোটদের জন্য বলেছি গিফট দেয়ার কথা) সবসময় মা বাবার জন্য দোয়া করা(রব্বির হামহুমা কামা রব্বাইয়ানি ছগীরা)
উস্তাদের সাথে আদব :-
উস্তাদের সাথে আদব রক্ষা করা।
অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা,হাটাচলা না করা,শব্দ প্রয়োগ না করা।
উস্তাদের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা রাখা।
উস্তাদের সামনে বিনয়ের সাথে থাকা।
উস্তাদ রুহানী পিতার ন্যায় তাই তাদের জন্য দোয়া করা। মনোযোগের সাথে উস্তাদের বক্তব্য ও ভাষন শোনা।
উস্তাদ কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করতে নিষেধ করলে তা মান্য করা।
উস্তাদের ভুল ত্রুটি হলে তার সমালোচনা না করা। মাঝে মাঝে উস্তাদের প্রশংসা করা।
উস্তাদের খবর নেয়া এবং তাদের সাথে সু সম্পর্ক রাখা
মোবাইল ব্যবহারের আদব
এমন সময় কাউকে ফোন করবেনা যখন তার ঘুম,নামাজ / আমলের ব্যঘাত হয়।
একটা নির্ধারিত সময়ে ফোন করার চেস্টা করবে
ফোনে কথা বলার সময় প্রথমে সালাম দিবে।
কাউকে ফোন দিলে আগে নিজের পরিচয় দিয়ে নিবে যাতে তার সমস্যা না হয় চিনতে।
মোবাইলের রিংটোন এ গান সেট করবেনা।
ওয়েল্কাম টিউন / রিংটোনে কোরান তেলাওয়াত, আল্লাহর নাম, কালিমা, আযান সেট করবেনা।
মসজিদ / মজলিসে থাকলে ফোন সাইলেন্ট এ রাখবে।
*মোবাইলের ক্ষতিকর দিক*
বর্তমান এ ছোট – বড় সবাই মোবাইলের প্রতি আসক্তি হয়ে পড়ছে, বিভিন্ন ধরনের গেম, গান, বাজনা এসবের প্রতি ঝুকে যাচ্ছে, এতে তাদের যা ক্ষতি হচ্ছে…
সময় নষ্ট হয়।
পড়ালেখার প্রতি অমোযোগী হয়ে যায়।
স্বভাব – চরিত্র নষ্ট হয়।
স্বাস্থ্য নষ্ট হয়।
ঈমান ও আমলের প্রতি চাহিদা কমে যায়
বাড়িতে প্রবেশের আদব ঃ
১। কারোর বাড়িতে প্রবেশের দরকার হলে অথবা কোন বাড়ির কাউকে ডাকতে হলে অথবা কোন বাড়ির কারোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হলে তার বাড়ির সামনে এসে তার দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবেন না। বরং দরজার বাম অথবা ডান পাশে আড়ালে দাঁড়াবেন। যাতে দরজা খোলা থাকলে তার বাড়ির ভিতরে আপনার নজর না যায়। আর এই নজরের জন্যই তো অনুমতি নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহানবী (ﷺ) এই ভাবেই অন্যের দরজায় দাঁড়াতেন। এবং তাঁর দরজার সামনে কেউ দাঁড়ালে তাকেও ঐ নিয়মে দাঁড়াতে শিক্ষা দিতেন।
তবে যদি দরজা খোলা থাকে তাহলে ভিন্ন কথা।
২। জেনে রাখুন যে, কারো বিনা অনুমতিতে তার বাড়ির ভিতরে দৃষ্টিপাত করা হারাম। দরজা অথবা জানালা দিয়ে, রাস্তা থেকে অথবা অন্য বাড়ির ছাদ বা জানালা থেকে, গাছ বা গাড়ির উপর থেকে কারো বাড়ির ভিতরে নজর দিলে নজরবাজের চোখ ফুটিয়ে দেওয়া বৈধ করা হয়েছে।
৩। দরজার পাশে দাঁড়িয়ে বাড়ির লোকের উদ্দেশ্যে কিছু বলার অথবা প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার পূর্বে সালাম দিন। বলুন, ‘আস্সালামু আলাইকুম। অমুক কি বাড়িতে আছেন’ বা ‘আমি কি ভিতরে আসতে পারি?’
৪। সালাম ও কথা বলার পর যদি কোন সাড়া না পান, তাহলে তিনবার একই রূপ বলুন। তাতে যদি কোন সাড়া বা অনুমতি না পান, তাহলে সেখান হতে ফিরে যান। খবরদার সে বাড়িতে প্রবেশ করবেন না।
যেহেতু আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘যখন তোমাদের মধ্যে কেউ তিন তিনবার (কারো বাড়ি প্রবেশের) অনুমতি নেয় এবং তাকে অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে সে যেন ফিরে যায়।’’[5]
অবশ্য যদি সুনিশ্চিত হন যে, বাড়ির লোক আপনার আওয়াজ শুনতে পায়নি, তাহলে সে ক্ষেত্রে ৩ বারের অধিক ডাকাহাঁকা করাতে দোষ নেই।[6]
৫। আপনার ডাকে বাড়ির ভিতর থেকে ‘কে?’ প্রশ্ন এলে উত্তরে আপনি আপনার সুপরিচিত নাম ও পরিচয় বলুন। নচেৎ উত্তরে কেবল ‘আমি’ বলবেন না। অবশ্য নিজ নাম নিয়ে ‘আমি অমুক’ বা ‘অমুকের আব্বা’ বলতে পারেন।[7]
৬। দরজায় আঘাত করে আওয়াজ দেওয়ার দরকার হলে মৃদু আঘাত করুন। করাঘাত নয়; বরং নখাঘাত করুন। মহানবী (ﷺ) এর দরজায় নখাঘাতই করা হত।[8]
অবশ্য বাড়ির ভিতরে বসবাসের কক্ষ দূরে হলে সেই অনুযায়ী সজোরে আঘাত করা দূষণীয় নয়। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, যাতে সেই আঘাতে বাড়ি-ওয়ালা বিরক্ত না হয়ে যায়।[9] অথবা বাড়ির লোক ঘাবড়ে ও শিশুরা ভয় খেয়ে না যায়।
অনুরূপ খেয়াল রাখা দরকার কলিং বেল মারার সময়। কোন জবাব না আসার আগে একটানা বার বার রিং করে যাওয়া বেআদবের পরিচয়।
৭। বাড়ির লোক যদি বলে, ‘এখন ফিরে যান’ অথবা ‘পরে আসুন’ তাহলে মনের মধ্যে কোন প্রকার দ্বিধা, কুধারণা বা বিরক্তি না নিয়েই ফিরে যান। এটাই আল্লাহর আদেশ।
লেও প্রবেশ করবেন না।